সমাজের উন্নতি করা বা সমাজ পরিবর্তনের উপায় বাতলাইয়া দেওয়া ক্রিটিসিজমের কাজ না – হ্যারল্ড ব্লুম (পার্ট ১)
- বইয়ের ইন্ট্রু: আমার মনেহয় একজন মানুষের ইমাজিনেশন তার রেসের ভিতর থেকে আসা অভিজ্ঞতার রেজাল্ট – আর্নেস্ট হেমিংওয়ে।।
- বইয়ের ইন্ট্রু: একেক জন লেখক একেক তরিকায় লেখেন, আর কামিয়াবি তাদের কাছে একেকভাবে ধরা দেয় -টি.এস. এলিয়ট
- বইয়ের ইন্ট্রো: জীবনের মতোই আর্ট দিয়া সবাইরে খুশি করতে পারে না কেউ – পাবলো নেরুদা।
- বইয়ের ইন্ট্রু: যা দরকার… তা হইতেছে… একটা শক্তিশালী লোকাল কালচার উদ্ভাবন করা – ওরহান পামুক
- বইয়ের ইন্ট্রু : একটা কালচার যদি নিজের ক্রিয়েটিভ শক্তিটারে বাঁচায়া রাখতে চায়, তাইলে বিদেশি কালচারের ব্যাপারে উদার থাকা লাগবে – ইতালো কালভিনো।
- এই সময়ে যে কোন কিছুর চাইতে ভিডিও গেমস ফিকশনের অনেক কাছাকাছি – হারুকি মুরাকামি।
- বই: চিনোয়া আচেবে’র ইন্টারভিউ
- এলিস মুনরো’র ইন্টারভিউ (সিলেক্টেড অংশ)
- দেরিদা অন শোয়াহ
- মিডিয়ার আসলে কাজ হইতেছে সুন্দর রকমের ডিসটরশন তৈরি করা – জ বদ্রিয়া
- একটা ক্যারেক্টার কখনোই ভালো বা খারাপ কিছু করতে পারে না, সে জাস্ট ট্রুথের সাইডে থাকতে পারে বা পারে না – টারানটিনো
- আমি সবসময় লিখতে লিখতে অনুবাদ করতে থাকি – অরুন্ধতী রায়
- যেকোনো চিন্তা, পোয়েটিকাল বা অন্যকিছু, যেকোনো চিন্তাই অনেককিছুর জোট হইয়া তৈয়ার হয় – রবার্ট ফ্রস্ট
- একটা ভালো রোমান্স ফিল্ম সবসময় নিঃসঙ্গতার ফিলিংটার উপর নির্ভর করে – ওং কার ওয়াই
- সমাজের উন্নতি করা বা সমাজ পরিবর্তনের উপায় বাতলাইয়া দেওয়া ক্রিটিসিজমের কাজ না – হ্যারল্ড ব্লুম (পার্ট ১)
- ফিকশন হইলো ফ্রিডম – সুসান সনট্যাগ
- উডি এলেনের ইন্টারভিউ: সমস্যা হইতেছে ক্রিয়েটিভ হওয়ায় কিছু গ্ল্যামার আছে
- আপনি আসলে কে সেইটা ঠিক বুইঝা উঠতে পারার আগে আপনি লিখতে পারবেন না – সালমান রুশদি
- একটা নভেলে যদি লিটেরারি ট্রুথ থাকে ওইটার আর কিছু লাগে না – এলেনা ফেরান্তে
- পলিটিক্স যা করে সাহিত্য তার চাইতেও দীর্ঘস্থায়ী বিষয়ের মামলা – মারিও বার্গাস ইয়োসা
- আপনার যেইটা বলা লাগবে সেইটাই আপনার ফর্মটা ঠিক করে দিবে – ডোরিস লেসিং
- একজন লেখকরে রিস্ক নিতে হয়, সে যা দেখে সবকিছুরেই লিখতে পারার বিষয়ে – জেমস বল্ডউইন
- একজন ভালো লেখকের তার নিজস্ব স্টাইল থাকতে হয় – কেনজাবোরো ওয়ে
- সাহিত্য কোনো মোরাল বিউটি কনটেস্ট না – ফিলিপ রথ
- এমন এক অডিয়েন্স থাকে যারা আসলে কোথাও এগজিস্ট করে না – হা জিন
- সাহিত্য এবং আর্টে কিছু ভড়ং, কিছু মহৎ এটিচিওড ঢুকে গেছে, যেগুলা ডেনজারাস – চেসোয়াফ মিয়শ
- একটা নভেলের জন্ম একটা কবিতা দিয়া শুরু হয় – গুন্টার গ্রাস
হ্যারল্ড ব্লুম হইলেন বিশ শতকের আমেরিকান লিটারেরি ক্রিটিসিজমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোক। উনার বইপত্র নাড়াচাড়া করা আমার ব্যক্তিগত রিডিংয়ের জন্যে একটা টার্নিং পয়েন্টই বলা যায়। কারণ, ভালো ক্রিটিসিজম যে একটা লেখার জন্যে কতটা সহায়ক হইতে পারে তা হ্যারল্ড ব্লুমের থাইকাই শিখতে পারছিলাম। অন্তত অই চেষ্টাটা পড়ার পর থিকাই শুরু হইছিলো আরকি।
উনি প্রায় ৫০ টারও উপ্রে বই লেখছেন। বিশেষত বিভিন্ন রাইটারগোর উপ্রে আলাদা কইরা লিটারেরি ক্রিটিসিজম সম্পাদনা ও সংকলন করার জন্যে ওনার নাম সবার উপরে থাকবে। ওনার দ্যা এ্যাংজাইটি অব ইনফ্লুয়েন্স, দ্যা এনাটমি অব ইনফ্লুয়েন্সঃ লিটারেচার এজ এ্যা এ্যাওয়ে অব লাইফ, হাউ টু রিড এন্ড হোয়াই – এই বইগুলার কথা আলাদা কইরা কইতেই হয়।
প্যারিস রিভিউ’র নেওয়া ওনার এই ইন্টারভিউটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ। কারণ, এই ইন্টারভিউটায় ওনার ছোটবেলা হইতে শুরু কইরা এই লিটারেরি ক্রিটিসিজমের ফিল্ডে আসা পাশাপাশি বিভিন্ন রাইটারগোর সম্পর্কে মূল্যায়ন পাশাপাশি লিটারেরি ক্রিটিসিজমের অবস্থা পাশাপাশি এই ফিল্ডে আসার পর আক্রমণের স্বীকার মানে ওনার সামগ্রিক জীবনের একটা সারসংক্ষেপের দেখা মিলবে এই ইন্টারভিউটা।
আশা রাখি, এই ইন্টারভিউটা ভবিষ্যতে হ্যারল্ড ব্লুমরে পড়ার জন্যে উসকাইয়া দিবে। হ্যাপি রিডিং। 🙂
সারোয়ার রাফি
…
সাম্প্রতিক সময়ে, হ্যারল্ড ব্লুমরে শুধু একাডেমিক জার্নাল এবং আলপের মাধ্যমেই না, বরং নিউজপেপারে, অপ-এড পেইজে, টেলিভিশন এবং রেডিওর মাধ্যমেও আক্রমণ করা হইতেছে। এই আক্রমণটা আসতেছে ওনার বেস্ট সেলার বই ‘দ্যা বুক অব জে’ (The Book of J)’র কারণে। বইটাতে ব্লুমের যুক্তি আছিলো, জনসাধারণের মইধ্যে এই J-writer ই হইলো হিব্রু বাইবেলের প্রথম লেখিকা, যে কিনা শুধু অস্তিত্বেই না (গত শতক হইতে বাইবেলের ইতিহাসবিদগোর মইধ্যে যে বিষয়টা নিয়া বির্তক চলতেছে), প্রায় নির্দিষ্টভাবেই একজন মহিলা ছিলেন। সলোমোনিক এলিটগোর অধীনে রেহোবোয়াম অব জুডানের শাসনে কোর্ট ইতিহাসবিদগোর লগে প্রতিযোগিতায় উনি বইটা লিখছিলেন। বাইবেলের পণ্ডিত, রাব্বী, সাংবাদিক, এর পাশাপাশি প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক সূত্রগুলার থিকা ব্লুমের উপর এই আক্রমণগুলা আসে। আর এরই ফলে ব্লুম কখনোই ওর ভিউগুলা থিকা এর আগে এতো আলাদা হইয়া যান নাই অথবা ওদের কাছে অতো নিরাপদও থাকেন নাই। উনার নিজের বর্ণনামতে উনি হইয়া গেছিলেন, “একজন ক্লান্ত, বিষণ্ন, দয়ালু, বুইড়া প্রাণী”, যিনি তার বহু বন্ধু এবং নিন্দুকগোরে স্নেহ ও হতাশায় আগ্রহের লগে গ্রহণ করছিলেন।
উনি রাজনীতি, রোমান্স, খেলা ইত্যাদি – যে কোন বিষয় নিয়াই কথা কইতে পারলে খুশি হন – যদিও স্বীকার করেন যে উনি বহু বিষয়ের মইধ্যেই একটু বেশি মাত্রায় ঢুইকা পড়েন। কারো সাথে উনার মতের সাথে অমিল হইলে তখন উনার জবাব থাকে, ” ওহ, না, না, মাই ডিয়ার…”। শেক্সপিয়ারের ক্লাসে ফিটফাট পোশাক পরা এক গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ড উনারে বলছিল, ল্যাগো, ওথেলোর উপ্রে সেক্সুয়ালি জেলাস থাকবার পারে; ব্লুম তার ভুরু কুঁচকাইয়া, মোজা পরা পা দুইটা একসাথে আইনা, শার্টে হাত গুঁইজা, চিল্লায়া বলছিলেন যে, “এইটা হইতে পারে না, মাই ডিয়ার। আমি অবশ্যই এর প্রতিবাদ করতেছি।” এইটা তেমন অবাক করার বিষয় না বরং সাধারণ ব্যাপারই কোনো আর্টিকেল এবং লেকচার শুরুর সাথে সাথে এক্স স্টুডেন্ডদের সাথে ব্লুমের তর্কাতর্কি করা, এবং তার দৃষ্টিতে, ব্যাপারগুলা এমনই হওয়া উচিত। উনি একটা এমারসোনিয়ান বাণী কোট করতে পছন্দ করেনঃ “আমি পড়ানো থিকা অইন্য কিছু না বরং একরাশ বিরক্তিই অর্জন করছি।”
এই ইন্টারভিউটা নিউ হ্যাবেন এবং নিউইয়র্কের বাড়িটাতে যেখানে উনার বউ জেনের লগে থাকতেন সেখানে নেওয়া হইছিলো – প্রথম বাড়িটাতে চার দশক সময় ধইরা পইড়া রইছে ফার্নিচার ও বইগুলা, অন্যটা ফার্নিচারবিহীন, যদিও দুইটাতেই উনার আগাইয়া রাখা কাজ এবং স্টুডেন্টদের পেপার ছড়াইয়া রইছে। যদি কথাবার্তা খুব ভারী না হয় তবে ব্লুম মাঝেমধ্যে বারোক (Baroque), মাঝেমধ্যে জাজ মিউজিক শুনতে পছন্দ করেন। (নিউইয়র্কের গ্রিনউইচ ভিলেজের এপার্টমেন্টটায় জাজ মিউজিক শুনতে উনি আরো ফ্রিডম পান।) ফোন বাইজা চলে। ফ্রেন্ড, এক্স স্টুডেন্ট, কলিগদের ফোনও তখন রাইখা দেন। তার কথাগুলা অদ্ভুত বিস্ময়ের লগে উচ্চারিত হয়ঃ “জোম্বাহ (Zoombah)”, একটার জন্যে – সোয়াহিলি (Swahili) বলেন “লিবিডো (Libido)” এর জন্যে- চটকদার এই শব্দগুলা এক বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়াই বলেন, এর সাথে মিল-রাখা বিশেষণ “জোম্বিনাশাস (Zoombinatious)” এবং এর ক্রিয়া “Zoombinate (জোম্বিনেট)”-ও বলেন। ব্লুম এমনভাবে কথা কন যেন প্রতিটা শব্দই তার সামনে ছাপার কাগজে আসতেছে। ব্যাকরণের দিক দিয়া জটিল, মাঝেমধ্যে দুরূহও বলা চলে। কিন্তু কঠিন বা আনন্দদায়ক যাই হোক না ক্যান উনি কথা শেষ করবার সময় এগুলারে দারুণ সজীবতার মাধ্যমে তুইলা ধরেন। এর কারণ এই যে, উনি পইড়া পইড়াই ইংরেজি শিখছেন, নিজস্ব উচ্চারণভঙ্গিতে তার নিউইয়র্কের সুর আছেঃ উনি ব্যাখা করছিলেন যে, “তুমি ইস্ট ব্রোনক্সের সকল ইয়েডিশ ফ্যামিলিতে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করতে পারবা ব্লেকের প্রফেসির শব্দগুলারে উচ্চারণ করার মাধ্যমে”। কথাবার্তা শুরু করেন সরাসরিই, মাঝেমধ্যে ব্যক্তিগত প্রশ্নের সাথে, অথবা একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়াঃ ”ওহ, ব্লুমিয়ান পা দুইটা আজকে কেমনে ব্যথা করতেছে!”
Antonio Weiss
১৯৯১
…
ইন্টারভিউয়ার: আপনার বাইড়া ওঠার মেমোরি নিয়া কিছু কন?
হ্যারল্ড ব্লুম: বহু বছর পার হইয়া গেছে। আমার বয়স এখন ষাট। বাইড়া ওঠার কথা তেমন ইয়াদ করতে পারি না। আমার বাইড়া ওঠা মূলত অর্থোডক্স ইস্ট ইউরোপিয়ান ইহুদি পরিবারে। যেখানে প্রতিদিনকার ভাষা ছিলো ইয়েডিশ। মা খুবই ধার্মিক ছিলেন যদিও বাবা অতো না। আমি এখনো ইয়েডিশ কবিতা পড়ি। তাতে আমার অনেক ইনটারেস্ট আছে আর পইড়া খুবই মজা পাই।
ইন্টারভিউয়ার: যেখানটায় বাইড়া উঠছিলেন ঐখানকার নেইবারহুড লইয়া কি কিছু মনে আছে আপনার?
ব্লুম: প্রায় নাই কইলেই চলে। তয় একটা ভালো মেমোরি হইলো, বাঁইচা থাকার তাগিদে, আমি ও আমার বন্ধুরা, সবসময় শক্ত-সামর্থ্য আইরিশ নেইবারদের লগে স্ট্রিট ফাইট করতাম। তাগোর মইধ্যে কেউ কেউতো আইরিশ-আমেরিকান নাজি সংগঠন ‘সিলভার শার্টস’ দিয়া ইনফ্লুয়েন্স ছিলো। এইটা ছিলো ১৯৩০ এর দশকের কথা। আমাগোর পুব দিকের সীমানায় আইরিশ নেইবাররা থাকতো, আমরা থাকতাম ইহুদি পাড়ায়। আমাগোর সীমানায়, দক্ষিণের ছড়ানো পথটার দিকে, একটু পরেই আইরিশ পাড়া শুরু। ওরা আমাগোর এদিকে রেইড করতো এবং আমরা পাল্টা ফাইট করতাম। স্ট্রিট ফাইটের ক্ষেত্রে ওরা ছিলো ভয়ংকর। ফাইট করার সময় ওরা বোতল এবং বেজবল ব্যাট ভাঙ্গতো। তখন ছিলো খুবই খারাপ সময়। যদিও বয়স বাড়ার লগে লগে আমি তা সবসময় বলি এবং দেখি যে, আমার বহু ভালো বন্ধুই হইলো আইরিশ।
ইন্টারভিউয়ার: আপনার ক্যারিয়ার শেইপ করতে এই ব্যাকগ্রাউন্ড কি কোনোভাবে হেল্প করছে বইলা মনে করেন?
ব্লুম: অবশ্যই। আমার ধারাবাহিক রিডিংয়ের ক্ষেত্রে এইটা আগে থিকাই গুরুত্বপূর্ণ রাখছিলো। এইটা আমারে বাইবেলরে ডেফিনিটিভ টেক্সট হিসাবে পড়তে প্রভাবিত করছিল। আর অবশ্যই, কোনো ইন্টারপ্রিটেশনের ক্ষেত্রে এইটা এখনও আমায় খুব হেল্প করে। ইন্টারপ্রিটেশনের জুডিয়াক ট্রেডিশনের আলাপ একজনের লাইগা খুবই দরকারি জিনিস। বাইবেলের ইন্টারপ্রিটেশন পুরাই ন্যাচারাল কিন্তু আমার অর্থোডক্স ধর্মতত্ত্বে কোনো বিশ্বাস নাই। এমনকি যখন আমি ছোট তখন থিকাই এই অর্থোডক্স স্পিরিচুয়ালিটির ব্যাপারগুলা নিয়া খুবই চিন্তায় ছিলাম। অবশ্যই, মানুষ হিসাবে নিজেরে আমি একজন আদর্শ ইহুদি বইলাই বিবেচনা করি। অনেক সময়ই বলি যে, সেকেন্ড সেঞ্চুরিতে রোমান সাম্রাজ্যের ভিতরে প্যালেস্টাইনের ইহুদিরা বাইবেলের একটা ভুল পাঠের মইধ্যে দিয়া গেছিল এবং আঠারো শতকে এই ব্যাপারগুলা পুরাই খাপছাড়া হয়ে গেছিল। কিন্তু অন্যদিকে আমি মনে করি, সবচে জটিল অভিজ্ঞতা আমার লাইগা, একজন পাঠক হিসেবে, বাচ্চাকালে কোনো হিব্রু বাইবেল না পড়া। আমার পড়ালেখার শুরুই হইছে ইংরেজিতে কবিতা পড়ার ভিতর দিয়া, যেইটা এখনো আমার জন্য কাজ করে, বাইবেলের কনভারশনের একটা শক্তি হিসাবে কাজ করে। প্রথম এস্থেটিক অভিজ্ঞতা হইছিলো হার্ট ক্রেইন (Hart Crane) এবং উইলিয়াম ব্লেকের (William Blake) কবিতা পইড়া – এই দুই কবির কথা বিশেষভাবে কইতেই হয়।
ইন্টারভিউয়ার: তখন আপনার বয়স কত ছিলো?
ব্লুম: কিশোর বয়সে তখনো পড়ি নাই, কত হইবো দশ কি এগারো বছর। আমার এখনো মনে পড়ে, ক্রেইন আর ব্লেক কী অসাধারণ ফূর্তি, কী অসাধারণ ফোর্স আমার মইধ্যে আইনা দিছিল – ঠিক কইরা বলতে গেলে, ব্লেকের লম্বা কবিতাগুলার ভিতর রেটরিক – যদিও তখনো পর্যন্ত এগুলার ব্যাপারে জানতাম না। আমি ব্রনক্স লাইব্রেরি থিকা হার্ট ক্রেইনের নির্বাচিত কবিতার একটা কপি পড়তে নিছিলাম। আমার এখনো মনে পড়ে, পেইজগুলাতে ক্রেইনের অসাধারণ বাঁকা-কথাগুলা আমারে মাতাল কইরা রাখছিল।
“O Thou steeled cognizance whose leap commits/The agile precincts of the lark’s return”
আমি জাস্ট এইটার মারলোভিয়ান (marlovian) রেটরিক দিয়া মুগ্ধ হই। এখনো বইটার স্বাদ নিজের মইধ্যে অনুভব করি। আসলে এইটাই ছিলো, আমার জীবনের প্রথম বই। আমি আমার বড় বইনরে এই বইটা দেওয়ার জন্যে বলি। আমার কাছে এখনো সেই পুরানা কালো এবং সোনালি সংস্করণের বইটা আছে, যেটা ১৯৪২ সালে আমার জন্মদিনে সে উপহার দিছিল… আমি মনে করি, এই বিশ শতকে ইয়েটস এবং স্টিভেনস এর উপরে গোপনে যদি কারো নাম রাখি তবে সে হইবো হার্ট ক্রেইন। ক্রেইন ৩২ বছর বয়সে মইরা গেলো, তাই কেউ আসলে বুঝতেই পারলো না সে আসলে কবিতায় করলোটা কি। এইটা এক বড় ক্ষতিই যেমন বড় ক্ষতি শেলীর ২৯ বছর অথবা কীটসের ২৫ বছর বয়সে মইরা যাওয়া। ক্রেইন তার সব কাজগুলা করছে মাত্র সাত কি আট বছরের মইধ্যে।
ইন্টারভিউয়ার: আপনি কি বাচ্চাদের গল্প মানে ফেইরি টেলস পড়ছিলেন?
ব্লুম: আমার মনে হয় না। আমি শুধু বাইবেলই পড়ছিলাম, যেইটা, আসলে একটা বিশাল ফেইরি টেলস। আমি শিশু-সাহিত্য, গ্রাজুয়েশন শেষ হওনের আগে পড়ি নাই।
ইন্টারভিউয়ার: আপনি ছোট থাকতে কোনো কবিতা লেখছিলেন?
ব্লুম: আমার আগ্রহের দিক দিয়া দেখতে গেলে তেমন কিছুই ঘটে নাই। যদি কোনো কিছুর প্রতি আমার পরম ভক্তি কিংবা আনন্দ থাইকা থাকে তবে অইটা হইলো কবিতা পড়া। শুরুতেই ক্রেন এবং ব্লেকের কবিতা আমার লাইগা বড় শক্তি যোগাইছিলো। কবি হওয়া আমার ব্যাপারে ঘটে নাই। কোনো ভূত-টূতের সীমাটীমা দিয়া হইতো ঘিরা ছিলাম। আর অই সীমায় কোনো লাইন লেখা আমার লাইগা একরকমের সীমালঙ্ঘনই। কিছু ব্যাপার যা আমি ভালোভাবেই নিজের মইধ্যে ফিল করি।
ইন্টারভিউয়ার: আপনার এই ক্যারিয়ার বাইছা নেওয়ার ব্যাপারে পরিবারের ভিউ কেমন ছিলো?
ব্লুম: আমার মনে হয়,আমি যা হইছি তাগোর এই ব্যাপারে কোনো ধারণাই ছিলো না। মনে হয়, উনারা আশাহত হইছিলেন। উনারা ছিলেন ইস্ট ইউরোপ থিকা আসা ন্যারো দৃষ্টিভঙ্গির ইহুদী মাইগ্রেন্ট। উনারা ভাবছিলেন আমি ডাক্তার, উকিল অথবা দাঁতের ডাক্তার হমু। কবিতারও যে প্রফেসর হইতে পারে এ ব্যাপারে উনারা জানতেনই না। উনারা বুঝছিলেন, আমার মনে হয়, আমি হয়তো রাব্বি অথবা একজন তালমিউডিক স্কলারের পথ বাইছা নিছি। কিন্তু শেষমেশ, আমার মনে হয়, এই একটা অথবা অন্যটার ব্যাপারেও তাগোর কোনো আগ্রহ ছিলো না। ছোটকালে ইংরেজি কবিতা পড়া ছাড়া আর কোনো কাজে এডিক্টেড ছিলাম না। আমার এক চাচা আমারে জিগাইছিলো,যার ক্যাণ্ডির দোকান ব্রুকলিনে ছিলো, যখন বড় হমু তখন বাঁইচা থাকনের লাইগা আমি কি করমু? আমি কইছিলাম, শুধু কবিতা পড়তে চাই। উনি আমারে কইছিলেন, হাভার্ড এবং ইয়েলে কবিতার প্রফেসর আছে। জীবনে প্রথম অই জায়গাগুলার নাম শুনি, যেখানে কবিতার প্রফেসরও থাকে। তখন আমার বয়স কত হইবো, পাঁচ কি ছয় বছর। আমি তারপর উত্তর দিছিলাম, “তাইলে আমি হাভার্ড কিংবা ইয়েলের কবিতার প্রফেসর হমু।” অবশ্যই মজার বিষয় হইলো, তিনবছর আগে আমি একইসাথে হাভার্ডে চার্লস এলিয়ট নর্টন এবং ইয়েলে স্টেরলিং প্রফেসর হিসাবে ছিলাম। তাই এই সেন্সে, না বুইঝাই আমি আমার পেশা নিয়া ওভারডিটারমাইন্ড ছিলাম। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমার নিজের কাজ এবং অন্য অনেক ক্রিটিকসের কাজের মইধ্যে কোনো বেসিক ডিফরেন্স আছে কিনা। আমি এই পেশায় বহু আগেই আসছি এবং এর মইধ্যেই টিইকা আছি।
ইন্টারভিউয়ার: আপনারে ছোটবেলা থিকাই মনে রাখার দিক দিয়া এক বিস্ময়কর প্রতিভা মনে করা হয়। আপনার কি মনে হয়, এই মনে রাখবার ক্ষমতা খালি শব্দ দিয়াই আপনের মইধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি করে নাকি অন্য ফ্যাক্টরসও আছে?
ব্লুম: আরে না, এইটা ছিলো তাৎক্ষণিক এবং এইটা সবসময়ই টেক্সটের মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করে এবং অবশ্যই সাথে এস্থেটিক উপাদানও কাজ করে। আমি আগেই শিখছি,কবিতার খাতিরে নিজেরে যাচাই করা, মানে যাই হোক,ব্যাপারটা এতো নিশ্চিতভাবে হয় যে, আমি শুরু থিকা শেষ পর্যন্তই কবিতা ইয়াদ রাখবার পারি। আমি মনে করি, আমার মইধ্যে এই খাতিরে যে একমাত্র পরিবর্তনটা আসছে, মানে, নিৎসের প্রভাবের মাধ্যমে। এইটা হইলো, সে আমারে এস্থেথিটিক্যালি প্রভাবিত করছে। আমি বুঝবার পারছিলাম, আমার এই মনে রাখা এবং ভালোভাবে মনে রাখার গুণ যেইটা আমি মনে করি, এক তীব্র আনন্দ থিকা আসছে। আসলে এইটা একপ্রকার দুঃখ থিকাও আসতে পারে, তাই বলা হয়, আসলে নিৎসের অর্থের ভিতরেও কিছু দুঃখ লুকানো থাকে। মাঝে মাঝে এই দুঃখটা খুবই কষ্টের, মাঝে মাঝে এই দুঃখের এমন কিছু মান থাকে যেইটা একার পক্ষে নেয়া যায় না।
ইন্টারভিউয়ার: অতিরিক্ত পড়া ব্যাপারটারে ডেইলি লাইফের অভিজ্ঞতা থিকা পালানো বলে কখনো মনে করছিলেন?
ব্লুম: না। এইটা আমার লাইগা এক রকমের রাগ বা আসক্তি ছিলো যেইটা আমারে সামনের দিকে চালাইতো। এইটা ছিলো জ্বালাময়ী একটা জিনিস। এইটা ছিলো এক খাঁটি ঘোর। আমি মনে করি না, আমার নিজস্ব ভাবনাচিন্তা কখনো আমারে এই ব্যাপারে কনভিন্স করছে যে, এইটা একটা অনেক বেশি আইডিয়াল বাঁইচা থাকার একটা চেষ্টা, যে জীবনটাই আমি বাঁইচা থাকতে চাই। বরং এইটা ছিলো প্রেম। আমি অসম্ভবভাবে কবিতা পড়ার প্রেমে পইড়া গেছিলাম। আমি কখনো মনে করি না, কারোরই নিজের প্যাশনরে আইডিয়ালাইজ করা উচিত। নিশ্চিতভাবে আমি তা নিজেই করি না। আমি বোঝাইতে চাই যে, যখন কোনো পড়ার মতন ভালো কবিতা খুঁইজা পাই, তখন সেই কবিতাটা পড়তে খুব ভালোবাসি। কয়দিন আগে, আহা এতো বছরে এই প্রথমবার, শেকসপিয়ারের ট্রয়লাস এবং ক্রিসিডা (Troilus and Cressida) এক বসাতেই আমি শেষ করছিলাম। আমার জন্য এইটা খুবই বিস্ময়কর একটা অভিজ্ঞতা ছিল, পাওয়ারফুল, চমৎকার। এইটা ফ্যাকাশে হয়ে যায় না বা কমে যায় নাই। তবে অবশ্যই এর একটা নিজস্ব মূল্য আছে; শিওরভাবে যেইটারে কমায়া ফেলা যায় না বা আটায়া ফেলা যায় না অন্য আরেকটা নামের ভিতরে। ফ্রয়েড, নিঃসন্দেহে এই ব্যাপারটারে সেক্সুয়াল চিন্তা অথবা অতীতের কোনো সেক্সুয়াল ঘটনা হিসাবেই বিবেচনা করতে চাইতো। কিন্তু ধীরে ধীরে এইটা মনে হইছে যে, সাহিত্য এবং বিশেষত শেকসপিয়ার সাহিত্যে সাইকোএনালাইসিস থিকাও চেতনার আরো বিস্তৃত প্রকাশ ঘটাইতে পারছিলো।
ইন্টারভিউয়ার: আপনার টিচারদের মইধ্যে কারা আপনার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল? আপনি কি ইয়েলে নিউ ক্রিটিকসদের সাথে পড়ছিলেন?
হ্যারল্ড ব্লুম: উইলিয়াম কে. উইমসেট এই একমাত্র ব্যতিক্রম, উনি ছাড়া আমি কোন নিউ ক্রিটিকসদের সাথে পড়ি নাই। বিল ছিলেন একজন ফর্মালিস্ট এবং খুবই চালাক, এবং সেই সময়ে আমার প্রথম কোর্স আমি উনার আন্ডারেই নিছিলাম, যেটার নাম ছিলো থিউরিস অব পোয়েট্রি। উনি আমারে ধইরা ফেলছিলেন। আমার লেখা প্রথম প্রবন্ধে উনার মন্তব্য ছিলো, “এইটা হইলো লংজ্ঞিনিয়ান (Longinian) ক্রিটিসিজম। তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছো এই ধারা আমি ঠিক চাই না বা পছন্দ করি না।” উনি প্রায় ঠিকই ছিলেন। উনি আবার এরিস্টটেলিয়ান ঘরানার; যেখানটায় আমার চিন্তা, এরিস্টটল পুরা পশ্চিমা সাহিত্য সমালোচনা একেবারে শুরু থিকাই ধ্বংস কইরা দিছিল। আমি মনে করি, সিউডো- লংজ্ঞিনাস থেকে এই সাহিত্য সমালোচনা আসলে শুরু হইছে। তাই এই ব্যাপারগুলোতে আমাদের বড় মতবিরোধ ছিল, কিন্তু উনি দারুণ একজন টিচার ছিলেন। পরে আমরা খুব ভালো বন্ধু হইছিলাম। আমি তারে খুব মিস করি। উনি ছিলেন চমৎকার, বিশাল ও আর্কষণীয় ব্যক্তি,উচ্চতায় প্রায় সাত ফুট লম্বা,মতবাদে খুবই তীব্র ও ভয়ংকর একজন রোমান ক্যাথলিক কিন্তু ওনার মন ছিল খুবই নরম। আমরা একবার ড.স্যামুয়েল জনসন নিয়া আমাদের প্যাশন শেয়ার করছিলাম। আমি খুব উগ্রভাবেই তার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাই কিন্তু বিপরীত মনোভাব থাকলেও উনি আমার উপর মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করছিলেন। আমি মনে করি, বিল’রে “দ্যা এ্যাংজাইটি অব ইনফ্লুয়েন্স” উৎসর্গ করার মাধ্যমে এই ব্যাপারগুলাই বুঝাইছিলাম। আমার বইয়ের প্রথম দিককার একটা কপি যখন তারে দিই তখন সে এই বইটা নিয়া আমারে একটি নোট লিখছিল, এইটা এখনো আমি যত্নে রাইখা দিছি। “এই উৎসর্গ আমারে খুব অবাক করছে“, উনি বলছিলেন, এবং তারপর উনি করুণ সুরে যোগ করছিলেন, আমি ধারণা করি বইটা আমেরিকার রোমান্টিসিজমে প্লটিনাস হইতে এমারসনের প্লেটো এই ধারায় তোমারে ভালো নাম আইনা দিবে, কিন্তু এই মতবাদটাই আমি দেখবার পারি না।” হা, অবশ্যই, কবিতা বিষয়ে অনুভূতিগুলা নিয়া আমাদের মধ্যে মারাত্মক বিরোধ ছিল।
ইন্টারভিউয়ার: আপনার আগের প্রবন্ধগুলা কেমন ছিলো?
ব্লুম: আমার ঠিক মনে পড়ে না, কর্নেলে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট থাকার আগে কোনো প্রবন্ধ লেখছিলাম কিনা। কিন্তু তারপরও কয়েক বছর আগে সেখানকার আমার একজন টিচার বব ইলিয়াস আমারে একটা প্রবন্ধ পাঠায় যেইটা আমি হার্ট ক্রেনের উপ্রে লেখছিলাম, এইটার ব্যাপারে পুরাপুরিই ভুইলা গেছিলাম। তখন কর্নেলে আমি ১৬ অথবা ১৭ বছরের নতুন স্টুডেন্ট ছিলাম। পড়ার লাইগা এই প্রবন্ধটা আমার কাছে রাখিই নাই। আমি সম্ভবত এইটা নষ্টই কইরা দিছিলাম। এতোদিন এইটা আমার কাছে ছিলোই না। আমি এইটাতে মনোযোগ না যাওয়ার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। আমি এখন খুব কৌতুহলী যে এই প্রবন্ধটা কেমন ছিল তা জানতে।
ইন্টারভিউয়ার: প্রথম দিককার কোন লিটারারি ফিগাররা আপনার কাছে ইম্পর্টেন্ট ছিলো?
ব্লুম: মডার্ন ক্রিটিকগোর মইধ্যে একজন আমার খুব প্রিয়, এবং সেই একজন দিয়া, আমি মনে করি, খুবই ইনফ্লুয়েন্সড হইছিলাম, যদিও তার ব্যাপারে কেউ কথা কয় না, নাম হইলো জর্জ উইলসন নাইট । সে আমার পুরানা বন্ধু,পুরাই পাগল। ওয়ই কেন্নিথ বার্ক এবংহ্যারল্ড ব্লুমরে শান্ত এবং দয়ালু বানাইছে। বেশ বুড়া হইয়াই জর্জ মরছিল। আধ্যাত্মবাদে তার খুব আগ্রহ আছিলো এবং মরণের পরেও সে বাঁইচা ফিরা আসবে এই বিশ্বাস নিজের মইধ্যে রাখতো। আমারে বেশ কয়েকবারই কইছিলো যে, সে এইটা অক্ষরে অক্ষরেই বিশ্বাস করে। ক্রিশ্চিয়ান রেনেসাঁসে একটা মুহূর্ত আছিলো যেইটারে আমি মনে করি মডার্ন ক্রিটিসিজমের একটা সুন্দর মুহুর্তই, কারণ তখন সময়টা আছিলো খুব পাগলাটে ঘরানার। সে একজন স্পিরিচুয়ালিস্টের কথা কইতো, এফ.ডব্লিউ.এইচ মায়ার্স আর সে, ওর পাবলিশ হওয়া লেখা কোট করতো, এবং তারপর সে ভূত–টূত নিয়া কিছু ডেফিনেশন আওড়াইতো যেইটা মায়ার্স এর ভাষায়, “ফিরা আসো” এবং এগুলা সে আওড়াইতো একটা মাধ্যমের মইধ্যে দিয়া, এবং এই অবাক করা বাক্যটা যেইটা আমি হুবহু দিতেছিঃ “এফ.ডব্লিউ.এইচ মায়ার্স-এর কোটেশনগুলা স্টাইলে প্রায় একই ছিলো, সে এমনভাবেই কইতো, জাগতিক ‘মৃত্যুর‘ আগে ও পরে সবকিছুতে একটা কমন উইজডমরে ধারণ করতো, যেইটা আমাগোর সময়ে খুঁইজা পাওয়া কঠিনই।” আমি পুরাপুরিভাবে এইটার স্পষ্টতা সম্পর্কে বোঝাইতে চাইতেছি। কিন্তু, উইলসন নাইট এর প্রথম দিককার বইগুলা আসলে ভালোই – অবশ্যই বিশ শতকের ক্রিটিসিজমে একজন ইম্পর্টেন্ট লোক, যদিও এখন তারে মোটামুটি ভুইলা গেছে সবাই।
ইন্টারভিউয়ার: আমরা আপনার টিচারগোর ব্যাপারে কথা কইলাম। এখনা আমি আপনারে কবিগোর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবার চাই,যাগোরে আপনি বছর ধইরা চিনেন।
ব্লুম: অডেনরে আমি ভালোভাবেই জানি, যদিও বেশি জানি John Hollander’র মাধ্যমে। এলিয়টের লগে কখনো দেখা হয় নাই। স্টিভেন্সের লগে একবার দেখা হইছিলো। কর্নেলে তখনো আমি গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট। আমি উনার “Ordinary Evening in New Haven”র শর্ট ভার্সনটার পড়া শুনবার লাইগা ইয়েলে আসছিলাম। এইটা ছিল আমার ইয়েল কিংবা নিউ হ্যাবেনে প্রথমবার আসা। পরে আমি উনার লগে কথা কওনের সুযোগ পাই। তার লগে দেখা হওন ছিলো এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। আমরা শেলীরে নিয়া কথা কইছিলাম এবং উনি শেলীর ‘উইথ অব এটলাস’ থিকা আমার লাইগা একটা প্যারা উনি আবৃত্তি করছিলেন, যেইটা আমারে খুবই ইমপ্রেস করছিল। “আগুন কত সুন্দর হইতে পারে মানুষ তা কমই জানে“, শুরুটা এমন ছিলো।
ইন্টারভিউয়ার: আর কোনো লেখক কি আছে যার ব্যাপারে আপনি জানতে আগ্রহী ছিলেন অথচ পারেন নাই?
ব্লুম: না। যাগোরে চিনি তাগোর মইধ্যে গুটিকয়েক লেখকগোর ব্যাপারেই জানতে আগ্রহী আমি। বলা যায়, আমার কোনো কিছুই, সমস্ত ভালো বন্ধুগোর বিরুদ্ধে যায় নাই।
ইন্টারভিউয়ার: কারণ, তাতে অনেস্ট মূল্যায়ন বাধাগ্রস্ত হয়?
ব্লুম: না। কারণ, এই পেশায় বুইড়া হওনের লগে লগে অনেক লেখকগোরে ব্যক্তিগতভাবে জানার আগ্রহটা একেবারে ধ্বংস হইয়া যায়। সত্যই, এগোর মইধ্যে অধিকাংশই থাকে সুন্দর পুরুষ এবং সুন্দরী মহিলা, কিন্তু তাগোরও সমস্যা আছে – আপনে যদি কারো ঘনিষ্ঠ হইতে চান, তখন তাগোর মনে হয় যেন কোনো ক্লান্ত, বিষণ্ণ, বুইড়া লোকের লগে কথা কইতেছি। তাগোরে কোনো ঔপন্যাসিক অথবা কবি পেশার প্রতি সচেতন থাকনের থিকাও একজন লিটারেরি ক্রিটিক পেশাওয়ালা লোকের প্রতি বেশিই সচেতন থাকতে দেখা যায়।
(টু বি কন্টিনিউ…)