Main menu

নারী আন্দোলন – জোয়ান ডিডিওন

জুলাই ৩০, ১৯৭২

অমলেট বানাইতে গেলে শুধু ভাঙা ডিমই লাগে না, অপ্রেসড একজনরেও লাগে। ধরা হয় প্রত্যেক বিপ্লবীই এইটা বুঝে, আর প্রত্যেক নারীও বুঝে। নারীরা আমেরিকার ৫১{855ff4e32ca5c8db0719e8f837cd158afce0d103a8821dfb7d995472b79aa6d7}, এরা একদল পটেনশিয়াল বিপ্লবী ক্লাস হইতে পারে, নাও হইতে পারে। নারী আন্দোলনের ‘আইডিয়া’ থেকে এই বিপ্লবী ক্লাস আসছে। এখনো ডে কেয়ার সেন্টারগুলার আশেপাশে এই আন্দোলন নিয়া আলোচনা করার স্বভাব থেকেই বুঝা যায় কেন এইসব আইডিয়া থেকে মানুষ বিমুখ, যেসব পলিটিকাল আইডিয়া ন্যাশনাল জীবনরে আলাদা কইরা তুলে ধরে।

১৯৭০ সালে ফেমিনিস্ট থিওরিস্ট শুলামিথ ফায়ারস্টোন কইছিলেন, “নয়া ফেমিনিজম শুধু সোশাল ইকুয়ালিটির জন্য জাইগা উঠা একটা সিরিয়াস পলিটিকাল মুভমেন্টই না, এইটা ইতিহাসের সবচেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট রেভল্যুশনের সেকেন্ড ওয়েভ।” এই স্টেটমেন্টরে কেউই রহস্য মনে করত না, আর আন্দোলনের লিটারেচারে এইটাই একমাত্র এইরকম স্টেটমেন্ট ছিল না। যাইহোক, ১৯৭২ সালে, টাইম ম্যাগাজিনের নারী বিষয়ক একটা “বিশেষ ইস্যু”তে তুচ্ছ কইরা বলা হইছিল যে এই আন্দোলন দিয়া ডায়পার কম, দান্তে (আলিগিয়েরি) বেশি আসবে।

সিনটা সুন্দর, মহিলারা বাগানে বইসা বইসা লাসিয়াতে ওগনি স্পেরাঞ্জা (ইনফার্নো এর লাইন) বিড়বিড় করতেছে, কিন্তু এইটা পুরাপুরি নির্ভর করত আন্দোলনের একটা পপুলার ভিউয়ের উপর- আন্দোলনটা হইলো কন্টিনিউয়াসলি এক ধরনের কালেক্টিভ “ফুলফিলমেন্ট” বা “সেলফ এক্সপ্রেশন” চাইয়া যাওয়া। এই চাওয়াটার পিছে কোন আইডিয়া নাই, কোন ভাল স্বার্থ নাই। কিন্তু আসলে আইডিয়া ছিল, আইডিয়াটা মার্ক্সিস্ট ছিল, আর আইডিয়াটা এতই মার্ক্সিস্ট ছিল যে, নারী আন্দোলন নামে আমরা যে অদ্ভুত ঘটনাটা জানি সেইটার পিছে কোন স্বার্থই ছিল না এমন মনে হইত।

এই দেশে মার্ক্সিজমরে সবসময় একটা উদ্ভট আর অবাস্তব প্যাশন হিসাবে ধরা হইছে। একটার পর একটা অপ্রেসড ক্লাস শেষমেশ গিয়া পয়েন্ট মিস করত। দেখা যাইত, যারা অভাবী, তারা বেশি চাইতেছে। মাইনরিটিগুলাও আশা দেখায়া শেষে হতাশ করছে। এইটা আলাপ হইছে যে তারা আসলেই বিভিন্ন ইস্যু নিয়া কেয়ার করত, তারা রেস্টুরেন্টে একসাথে বসা বা বাসের সামনে বসতে পারারে আসল গোল ধরত, কোন বড় খেলার চাল ধরত না। তারা ইমিডিয়েট রিফর্ম থেকে সোশাল আদর্শের দরকারি ঝাঁপটারে বাধা দিল। হতাশাজনকভাবেই, তারা তাদের কমন উদ্দেশ্যরে অন্য মাইনরিটির সাথে এক করতে পারে নাই। ‘ব্রাদারহুড’ এর নামে অর্গানাইজারদের উপর তারা একটা ভালোই বিশ্রি রকমের সেলফ-ইন্টারেস্ট দেখায়ে চলছে।

আর তখন, সেই আশা-হারানো মূহুর্তে যখন কেউ প্রোলেতারিয়াত হইতে চাইতেছিল না, নারী আন্দোলন আইলো, আর নারী একটা আলাদা ‘ক্লাস’ হইলো। এই ইনস্ট্যান্ট চেইঞ্জের যে র‍্যাডিকাল একটা সিম্পল ভাব আছে, এইটা নিয়া অবাক হইতে হয়। কোন কোঅপারেটিভ প্রোলেতারিয়াত ছাড়া একটা বিপ্লবী ক্লাস তৈরি হয়, ঐটারে নাম দেওয়া হয়, ওইটার শুরু হয়, এই ধারণাটা একেবারে এত প্র্যাক্টিকাল আর এত ভিশনারি মনে হইছিল, এত এমারসনিয়ান মনে হইছিল, ১৯ শতাব্দীর ট্রান্সিডেন্টাল ধারার মনোভাবের সাথে দেরিতে এঙ্গেলস আর মার্ক্সসের পড়া ক্রস কইরা যেই জিনিস মাথায় আসত, সেটাই কনফার্ম করে। নারী আন্দোলন থিওরিস্টদের পড়তে হইলে মেরি উলস্টোনক্র্যাফটের কথা না ভাইবা মারগারেট ফুলাররে মনে করবেন- হাই মোরালের, লাঞ্চ না কইরা পেপার কাপ থেকে চা খাইয়া মিমিওতে (পুরানো ফটোকপি মেশিন) পেপার ছাপাইতে দৌঁড় দিত। বিশ্রি রাতগুলাতে পাতলা রেইনকোটের কথা মনে করবেন। ফ্যামিলি যদি ক্যাপিটালিজমের আখেরি দূর্গ হয়, তাইলে চলেন ফ্যামিলি বাতিল কইরা দেই। যদি বাচ্চা পয়দা করার দরকারটা নারীর কাছে আনফেয়ার লাগে, তাইলে চলেন টেকনোলজির সাহায্যে আমরা এই জুলুম থেকে উইঠা আসি। শুলামিথ ফায়ারস্টোন এই জুলুমরে যেমনে দেখছেন, “প্রকৃতির যেই অর্গানাইজেশন একদম ইতিহাসের শুরু থেকে আছে সেইটা হইল অ্যানিমাল কিংডম নিজেই।” আমি ইউনিভার্সরে মাইনা নিছি, মারগারেট ফুলারও শেষমেশ অনুমতি দিছে, কিন্তু শুলামিথ ফায়ারস্টোন দেয় নাই।

এইরকম নার্ভাস আর আঁতেলমার্কা প্যাশন বেশ নিউ ইংল্যান্ড ভাব দিচ্ছিল। র‍্যাডিকাল ম্যাটেরিয়ালিজমের আড়ালে এই আগের ভারী আইডিয়ালিজম কোনভাবে পুরানকালের আত্মনির্ভরশীলতা আর স্যাক্রিফাইসের কাহিনী কয়া বেড়াইত। শব্দের এই অগোছালো প্রবাহ একটা প্রিন্সিপাল হয়া গেল, আনসিরিয়াস হিসাবে আগের স্টাইলরে বাদ দেওয়া হইল। ডিম ভাঙার ইচ্ছাটা বাস্তবে হয়া গেল পাথরে খুতবা খুইঁজা পাওয়ার দক্ষ ক্ষমতার মত। টাই-গ্রেস অ্যাটকিনসনরে বলা হইছিল যে বিপ্লবের পরেও অনেক ‘সেক্সিস্ট’ ওয়েস্টার্ন সাহিত্য তাও রইয়া যাবে, উনি কইলেন, “জ্বালায়া দাও এসব সাহিত্য।”

কিন্তু অবশ্যই কোন বই পুড়ানো হইত না। হাতে যেই ধরণের অবাধ্য ম্যাটেরিয়ালই আসত না কেন, এই আন্দোলনের নারীরা পারফেক্টভাবে সেইখান থেকে ভালো নীতিকথা বের কইরা নিতে পারত। “বাপ-মা হইলে আপনারে মিথ ব্যাখ্যা করা শিখতে হবে,” মিস ম্যাগাজিনের প্রিভিউ ইস্যুতে লেটি কটিন পগ্রেবিন কইছিলেন, “বাচ্চার সাথে ক্রিটিক সেশনে যেকোন রূপকথা বা বাচ্চাদের গল্পের অংশ বাঁচানো যাইতে পারে।” অন্য সাহিত্য অ্যানালিস্টরা অন্যান্য বইগুলারে বাঁচাইতে বিভিন্ন তরিকা বের করছে। দা পোর্ট্রেইট অফ আ লেডি তে ইসাবেল আর্চাররে আর নিজের আইডিয়ালিজমের ভিক্টিম হইতে হবে না। তার বদলে সে একটা সেক্সিস্ট সমাজের ভিক্টিম হইতে পারে, যে “ওয়াইফ হওয়ার গৎবাঁধা সংজ্ঞা মুখস্থ কইরা ফেলছে”। ম্যারি ম্যাককার্থির দা কম্পানি শি কিপস এর ন্যারেটররে “বন্দি দেখানো যাইতে পারে কারণ সে একটা পুরুষের মধ্যে নিজের পরিচয় খুঁজতেছে”। একইভাবে, মিস ম্যাককার্থির দা গ্রুপ এ এইটা দেখানো হয় “কী হয় যখন নাম্বার ওয়ান উইমেন্স কলেজে ফিলোসফি আর হিস্টোরি পড়ার পরেও নারীদের উপর ব্রেস্টফিডিং আর রান্নাবান্না চাপায়া দেওয়া হয়।”

ফিকশনের কিছু ঝাপসা ব্যাপার আছে যেইগুলা বদলানো যায় না, এই জিনিসটা কখনো এইসব নারীর ক্ষেত্রে খাটে নাই, খাটার কথাও না, কারণ বেশিরভাগ ফিকশনই আইডিওলজি বিরোধী। তারা একটা ক্লাস বানাইলো ঠিকই, তারপর ওই ক্লাসরে সচেতন করা লাগত। প্রথমে “র‍্যাপ সেশন” নাম দিয়া তারা একটা পলিটিকাল টেকনিক করল, এইটারে তারপর “সচেতনতা-বাড়ানো” কইলো, তারপর ব্রিটিশ ফেমিনিস্ট জুলিয়েট মিচেলের মতে, “স্পিকিং বিটারনেস” নামের একটা চাইনিজ বিপ্লব প্র‍্যাক্টিসরে আমেরিকান কইরা থেরাপির মত কইরা চালাইলো। তারা মানুষ কমাইলো, আবার গ্রুপ বানাইলো, আবার বের কইরা দিল, একেকজনের ভুল আর সইরা যাওয়া, এলিটিজম, ক্যারিয়ারিজম নিয়া প্যারা খাওয়া শুরু করল।

তাদের কিছু চিন্তাভাবনারে স্ট্যালিনিস্ট বলাটা একটু বেশিই হয়া যাবে। এই নারীরা “ভুল” নাকি “ঠিক” এইটা নিয়া আলাপ দেওয়াটাও পয়েন্টলেস হইত। যেইটা অবভিয়াস, যেই মোরাল ইমাজিনেশন জমাট বাঁইধা সোশাল আইডিয়ালিজম আসে, এইটারে নিয়া ভাবা বেশ মিনিংলেস। “গ্রেটার গুড” এর উপর বিশ্বাস করা মানে কোনভাবে কিছু এথিক্স বাদ দিয়া কাজ করা। মার্ক্সিস্ট অ্যানালাইসিসে পাকা কাউকে জিগাবেন একটা পিনের মাথায় কতগুলা অ্যাংগেল আছে, আর আপনারে ওরা পালটা জিগাবে, অ্যাংগেল বাদ দেন- পিনের প্রোডাকশন কে কন্ট্রোল করতেছে ওইটা কন।

আমরা যারা মোরাল অস্পষ্টতা নিয়া চিন্তাভাবনা করি, আমাদের কাছে ফেমিনিস্ট অ্যানালাইসিসরে খুব ন্যারো আর ভুলভালে ভরা নিয়মকানুন মনে হইতে পারে। যাইহোক এইটা সিরিয়াস ছিল, আর এইসব এক্সট্রা সেনসিটিভ আইডিয়ালিস্টদের মিমিও রুম থেকে বাইর হয়া ক্যাভেট শোতে যাওয়াটা দর্শকদের চেয়ে তাদের কাছেই বেশি আনকম্ফর্টেবল লাগছে। তাদের কথা শোনা হইতেছিল, কিন্তু আসলে হইতেছিল না। অবশেষে অ্যাটেনশন দেওয়া হইতেছিল, কিন্তু তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয়ে। সবচেয়ে ব্রাইট মুভমেন্টেও নারীরা নিজেদের ডিশওয়াশিং নিয়া অবিচার আর সিক্সথ অ্যাভেনিউয়ের রাজমিস্ত্রীদের তাকানোতে অস্বস্তি পাওয়ার মত জঘন্য পাবলিক আলাপে জড়াইছে। (অপরিচিত একটা মিস স্কারলেট ভাবওয়ালা আলোচনায় এই কমপ্লেইন অদ্ভুত কিছু ছিল না, যেইখানে চাষ করা দুর্বল ফুলের সাথে “কথা বইলা” নাক-উঁচু প্রোলেতারিয়েতরা তাদের নষ্ট করত, এমন কিছু সাজেস্ট করা হইত।)

কয়টা ফ্রাইপ্যান ঘষা হইছে, বাথরুমের মেঝে থেকে কয়টা তোয়ালে তুলা হইছে, এক জীবনে কয়বার লন্ড্রি করা হইছে- তারা এইগুলা গুণত। রান্না করা হইত “কুত্তার মত খাটা”, আর এইটা কইরা কেউ ভালো ফিল করছে এমন দাবি করাটা ছিল জোর কইরা খাটানোর জন্য চাইয়া নেওয়া অবজ্ঞার প্রমাণ। বাচ্চাকাচ্চা ছিল কেবল খাবার ছিটানো আর হজম করার বিরক্তিকর মেকানিজম, কারণ ওরা নারীদের থেকে তাদের ” স্বাধীনতা” কাইড়া নেয়। সিমন দ্য বোভোয়ার কবর আর “দ্য আদার” হিসাবে নারীর রোলের সেরা পরিচয় থেকে এই রোল বদলানোর প্রথম স্টেপ হিসাবে মিস এ অ্যালিক্স কেটস শুলম্যানের ম্যারেজ কন্ট্রাক্ট (“বউ বিছানার চাদর উঠায়, জামাই চাদর বিছায়”) অনেক দূরের ব্যাপার ছিল। কিন্ত নারী আন্দোলন যেই তুচ্ছ দিকে যাইতেছিল এইটারে সরানোর জন্য জরুরি ছিল।

অবশ্যই এই ছোটখাট ব্যাপারগুলা শুরুতে মুভমেন্টের জন্য অনেক দরকারি ছিল। যেসব নারীদের এমনভাবে কন্ডিশন করা হইছিল যে নিজের অপছন্দের জিনিসগুলারে নিজের কাছেই লুকাইত, এইসব নারীদের রাজনীতিতে আনার একটা মূল টেকনিক ছিল এইটা। মিসেস শুলম্যান যখন বুঝতে পারলেন উনার হাজব্যান্ডের চেয়ে উনার কাছে কম সময় আছে, উনার যেমন লাগছিল, মুভমেন্টটা সব নারীর উপর ঠিক এই ধরণের ইফেক্ট ফেলতে চাইছিল (জেইন ও’রাইলির বর্ণনায়, “ক্লিক অফ রিকগনিশন”)। কিন্তু এইসব বুঝতে পারার কোন ফায়দা ছিল না। কেউ বড় পয়েন্টটা বুঝে নাই, পারসোনাল থেকে পলিটিকালের যে বড় ঝাপ আছে সেইটা দিতে পারে নাই।

আগে যেখানে সপ্তাহে বাচ্চাদের বলা হইত তারা যেন বাপ নাহলে মা যেকোন একজনরে তাদের পার্সোনাল প্রশ্ন করে, সেইখানে সপ্তাহরে ঘণ্টায়-ঘণ্টায় আইনা মিস্টার আর মিসেস শুলম্যানের ম্যারিড লাইফের ইম্প্রুভমেন্ট হয়তোবা হইছিল বা হয় নাই। কিন্তু ম্যারিড লাইফের ইম্প্রুভমেন্ট দিয়া তো আর বিপ্লব হয় না। বাসার কাজরে বলা যায়, যেমন লেনিন কইছিলেন, “নারীরা করে এমন সবচেয়ে আনপ্রোডাক্টিভ, সবচেয়ে জঘন্য, সবচেয়ে কঠিন কাজ।” একটা পলিটিকাল প্রসেসের প্রথম স্টেপ হিসাবেই এইটা কাজে আসছে, একটা ক্লাসরে নিজের অবস্থা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য এইটা কাজে আসছে, বিশ্বাস করার মত একটা মেটাফোর হিসাবেই কাজে আসছে। ‘৬০ এর শেষে আর ‘৭০ এর শুরুর দিকে আমেরিকায় শব্দগুলার লিটেরাল মিনিং কেবল পার্সোনালি আন্দোলনরে থামায়ে রাখার জন্যই হয় নাই, নিজেরে ভুলায়ে রাখার জন্যও হইছে।

তার উপর মুভমেন্টের লিটারেচার যখন নারীদের চিন্তাভাবনা দেখানো শুরু করল- ওইসব নারীর চিন্তাভাবনা যারা মুভমেন্টের আইডিওলজিকাল বেজই বুঝে নাই, মানুষের মনে হইল এই থামায়ে রাখা, এই ভুলায়ে রাখাটা ঠিকই হইতেছে, থিওরিস্টদের এত মতবাদ শুধু কিছু কুসংস্কার, কুতর্ক, ইচ্ছা-পূরণ, নিজেরে ঘৃণা করা আর অদ্ভুত কল্পনাতেই আঘাত করছে। হালকা কইরা এই লিটারেচার পড়লেও সাথে সাথে বোঝা যাইত একটা দুঃখী কল্পনা দিয়া একজন সাধারণ মহিলার কথা লেখা হইছে, যারে লেখক একটু বেশি ভালো কইরাই চিনে।

এই জেনেরালাইজ করা নারীর কনসেপ্টে সে নিজের বাদে সবারই ভিক্টিম হইত। তারে তার গাইনি ডাক্তারও জ্বালাইত, যে কিনা কন্ট্রাসেপটিভ পিলের জন্য তারে কাঁদাইত। সে পিলগুলা চাইত কারণ তারে প্রত্যেক ডেটে রেইপ করা হইত, তারে তার হাজব্যান্ড রেইপ করত, আর শেষে অ্যাবর্শনিস্টের টেবিলে গিয়েও রেইপড হইত। যখন পয়েন্টেড টো হিল জুতার ফ্যাশন চলতেছিল, “অনেক নারীর” মত সেও তার পায়ের আঙুল কেটে ফেলছিল। কসমেটিকস অ্যাডভারটাজিংরে সে এতই ভয় পাইত যে বলিরেখা থামাইতে সে দিনের “বড়সড় অংশ” ঘুমায়া কাটায়া দিত, আর যখন ঘুম থেকে উঠত, টেলিভিশনের ডিটার্জেন্টের অ্যাড তারে বন্দি বানায়া রাখত। সে তার বাচ্চারে একটা নার্সারি স্কুলে পাঠাইত যেইখানে ছোট মেয়েরা একটা “পুতুলখেলা কর্নারে” পইড়া থাকত, আর জোর কইরা তাদেরকে ব্লক দিয়া খেলা থেকে সরায়া রাখা হইত। সে জব করলে তারে একই কাজের জন্য রাখা (সবসময়) অযোগ্য পুরুষের “তিন থেকে দশগুণ কম” পে করা হইত। তারে বিজনেস লাঞ্চে যাইতে দেওয়া হইত না, কারণ পাবলিকে হাজব্যান্ড ছাড়া পরপুরুষের সাথে তারে দেখা গেলে সে লজ্জা পাইত। যখন সে একা ট্রাভেল করত, রেস্টুরেন্টে অপমানিত হওয়া বা হোটেল রুমে “ডোনাট খাওয়া”- এই চয়েসগুলা ফেইস করত।

এইসব আধা সত্যি ব্যাপারগুলা বারবার নিজেদের অথেন্টিকেট করত। অদ্ভুত কল্পনাগুলাও নিজেদের লজিক বানাইলো। কেন সে আরেকজন গাইনি ডাক্তারের কাছে গেল না, আরেকটা জব নিল না, কেন সে বিছানা থেকে উইঠা টিভি অফ করল না, আর সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার, কেন সে এমন হোটেলে থাকল যেখানে রুম সার্ভিসে শুধু ডোনাট পাওয়া যায়- এইসব অবভিয়াস ব্যাপারগুলা জিজ্ঞেস করা মানে হইল এমন একটা আর্গুমেন্টের লেভেলে জয়েন করা, যেই লেভেলের সাথে আসলেই নারী হওয়ার সম্পর্কঁটা ঠুনকো আর আনফরচুনেট। অনেক নারী যে অবজ্ঞা, এক্সপ্লয়টেশন আর সেক্স-রোল স্টিরিওটাইপিং এর ভিক্টিম হয় এইটা তো জানা কথাই, যেইটা অজানা সেইটা হইলো অন্য নারীরা এইসবের ভিক্টিম না।

কিন্তু অবশ্যই “ডিস্ক্রিমিনেটেড” হওয়ার বিরুদ্ধে অবজেকশন ছাড়াও অন্য কিছু একটা এখানে কাজ করতেছিল, সেক্স রোলে “স্টিরিওটাইপ” হওয়া থেকে এড়ায়ে চলা ছাড়াও। যত দিন গেল, দেখা গেল এই এড়ায়ে চলাটা আসলে অ্যাডাল্ট সেক্সুয়াল লাইফ থেকে হইতেছে- যতটুকু সম্ভব পবিত্র থেকে সারাজীবন বাচ্চা হয়া থাকা যায়। মুভমেন্ট লিটারেচারে বারবার লেসবিয়ান সম্পর্কের উইঠা আসা দেইখা মানুষ বারবার অবাক হইছে, সম্পর্কের “আবেগ” এর উপর জোর দেইখা, সেক্সুয়াল কানেকশনের “নরমভাব” দেইখা অবাক হইছে, যেন পার্টিসিপ্যান্টরা ব্যথা পাওয়া পাখি ছিল। “মেকিজমো” (machismo) বা পুরুষালি জোরজবরদস্তির এই কইমা যাওয়া এত চলছে যে মানুষে ভাবে লাখ লাখ নারী ডেভিড ক্যাসিডির চেয়ে বেশি সেক্সুয়াল পুরুষের সাথে ডিল করতে পারে না। ঠিক যেমন মানুষের মাথায় কনস্ট্রাকশন সাইটে নারীর ভয় আর ডিজগাস্টের অভিজ্ঞতার কথা শুইনা এই জিনিসটা সেট হয়ে আছে যে তারা ডেইলি লাইফের প্যারা সামলানোর জন্য বা রাস্তাঘাটে চলার উপযুক্ত না কারণ তারা বেশি “নরম”, তেমনি, মুভমেন্টের পরের দিকের লিটারেচারে মানুষ এই ইম্প্রেশন পাইতেছিল যে নারীরা অ্যাডাল্ট লাইফের প্যারা, ঝড়ঝাপটা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব “সেন্সিটিভ”- রিয়েলিটি সামাল দিতে অযোগ্য হওয়ায়, রিয়েলিটিরে অস্বীকার করতে নারীরা এই মুভমেন্টরে মূলনীতি বানায়া শক্ত কইরা ধরতেছিল।

পিরিয়ডের সাথে যেই অল্প সময়ের ভয়টা আসার কথা সেইটা কখনো আসে না। আমরা খালি এইটা হইত বইলা ভাবতাম কারণ একজন পুরুষ-শভিনিস্ট সাইকিয়াট্রিস্ট আমাদের কইছিল। কোন নারীরই অ্যাবোর্শনের পর দুঃস্বপ্ন দেখা লাগবে না, তারে খালি বলা হইছে যে তার দেখা উচিত। সেক্সের পাওয়ার খালি একটা অপ্রেসিভ মিথ, যেইটারে আর ভয় পাওয়া হয় না কারণ আমরা এক মুক্ত নারীর পরকীয়ার ঘটনা থেকে সেক্সুয়াল কানেকশন আসলে কী জিনিস সেইটা শিখছি, আর সেইটা হইলো “জোক বইলা হাসাহাসি করা, একসাথে শুয়া থাকা আর তারপর লাফ দিয়া উইঠা সিসেমে স্ট্রিট এর গানের বই থেকে সব গান গাওয়া।” নারী হইতে কেমন লাগে এইটা নিয়া একজনের চিন্তা আর বাস্তবতার সাথে সব ফারাক- গভীর পানির নিচে জীবন কাটানোর সেন্সটা, রক্ত, জন্ম আর মৃত্যুর সাথে ডার্ক ইনভলভমেন্টটা- সবকিছুরে হুদাই, অদরকারি বলা যাইতে পারে কারণ কেউ আসলে এইটা ফিলই করে নাই।

এতদিন নারীরে শুধু বলা হইছে, আর এখন তারে রিপ্রোগ্রামড হইতে হবে, ঠিক হইতে হবে, ট্যাম্প্যাক্সের অ্যাডভার্টাইজমেন্টের “মডার্ন” ছোট মেয়েদের মত পবিত্র আর দাগহীন থাকতে হবে। যত দিন যাইতেছে আমরা এইরকম চিরকিশোরীদের ইন্টারেস্টেড ভয়েস শুইনা যাইতেছি, ওইসব নারীর ভয়েস যারা নারী হিসাবে নিজেদের ক্লাস পজিশন নিয়া বিরক্ত না, বরং বাচ্চাকালের এক্সপেক্টেশনের ফেইলিওর আর ভুল ধারণার জন্য বিরক্ত। কেউ সুজ্যান এডমিস্টনরে কয় নাই যে ‘আই ডু’ বলার পরে আপনি ভাবছেন আপনি অমর প্রেমের প্রমিজ করতেছেন, কিন্তু আসলে আপনি অধিকার আর দায়িত্বের এমন মারপ্যাঁচের সিস্টেমে জড়াইতেছেন যে এইটা আপনার সব বিশ্বাসের উপর অভিশাপ আইনা দিতেছে।

এলেন পেকের কাছে “বাচ্চাকাচ্চা পয়দা হওয়া মানে রোমান্স গায়েব হয়া যাওয়া, ফ্রিডম চইলা যাওয়া, আইডিয়াল আর অর্থনীতিরে ছাইড়া দেওয়া।” ‘নারী স্বাধীনতার কথায় ভরসা কইরা শহরে আসা এক সাবআর্বান হাউজওয়াইফ’ পরিচয়ে নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিনের রিসেন্ট ইস্যুতে এক নারী জানাইছে সে কী কী বিশ্বাস করছে: “হ্যাঁ, বিগ অ্যাপেলের (নিউইয়র্ক শহর) ব্রাইট আলো আর সিভিলাইজেশন দেইখা রেস্পন্ড করার সুযোগ পাইতে এখানে আইছি, হ্যাঁ, কম্পিটিশন করার সুযোগ পাইতে আইছি, কিন্তু সবচেয়ে বেশি আইছি মজা করার সুযোগের জন্য। এতদিন ধরে মজা পাওয়াটাই মিসিং ছিল।”

অমর প্রেম, রোমান্স, ফান। বিগ অ্যাপেল। এইগুলা তুলনামূলকভাবে অ্যাডাল্টদের জন্য রেয়ার এক্সপেকটেশন, কিন্তু বাচ্চাদের জন্য না, আর এইসব সাহসী নারী যারা নতুন জীবনযাপন করতেছে তাদের কাহিনি শুনলে খারাপই লাগে। একজন এক্স ওয়াইফ আর তিন বাচ্চার মা তার প্ল্যান নিয়া কইতেছিল, “আমার কলেজ গার্ল হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করব। আমি নিউইয়র্কে গিয়া বিশাল বড় রাইটার হব। বা দিন আনে, দিন খায় টাইপ রাইটার হব। ওইটাতে ফেইল কইরা তারপর পাবলিশিংয়ে জব নিব।” সে তার বান্ধবীর কথা কইলো, যে কারো মেয়ে, ওয়াইফ বা মা ছাড়া কখনো কোন পরিচয় পায় নাই, কিন্তু এখন টের পাইতেছে তার পটারির একটা ভালো হাত আছে। এইরকম বাচ্চাদের মত রিসোর্সফুলনেস- পাবলিশিংয়ে জব নেওয়া, ট্যালেন্টেড পটার হওয়া- এইটা হতবাক কইরা দেয়। আসল জীবন, আসল পুরুষের উপর বিরক্তি উঠা, বাস্তব জীবনের অনিশ্চয়তা, অ্যাডাল্ট সেক্সুয়াল লাইফের রিপ্রোডাক্টিভ বা খারাপ সম্ভাবনাগুলা কোনভাবে বাকরুদ্ধ কইরা দেয়।

“অপ্রেশনরে যেমনে দেখে তেমনে ওইটার আশপাশ দিয়া অর্গানাইজ করা আর ডিফাইন করা অপ্রেসডদের অধিকার।” এই নারীদের প্রশ্ন সলভ করার চেষ্টা করতে মুভমেন্ট থিওরিস্টরা বারবার এইটা কইতে থাকে, নিজেদের কনভিন্স করতে থাকে যে যা হইতেছে এইটা এখনো একটা পলিটিকাল প্রসেস, কিন্তু এর মধ্যেই দেয়ালের উপর লেখা হয়া গেছে। এরা পল্টি খাওয়া, এরা বিপ্লব চায় না, এরা “রোমান্স” চায়। এরা নারী অপ্রেশনে বিশ্বাস করে না, এরা একদম আগের জীবনের ছাঁচে নতুন জীবনে নিজেদের চান্সের উপর বিশ্বাস করে। এই দেশের কালচার তাদের সাথে কী করছে এইটা নিয়া কোনভাবে তারা থিওরিস্টদের চাইতেও দুঃখের কাহিনি শোনায়। তারা আমাদের এইটাও কয় বইলা আমি সন্দেহ করি যে, নারী মুভমেন্ট এখন আর প্রতিবাদের বিষয় না, এইটা একটা লক্ষণ।

বইয়ের পোস্টার

…  …  …

এই বইটাসহ অন্য বইগুলা কিনতে এই লিংকে ক্লিক করেন:
ইন্টারভিউ সিরিজ এবং বাছবিচার ও প্রিন্ট পোয়েট্রি’র বই – Posts | Facebook

 

The following two tabs change content below.
Avatar photo

রপকথা নাওয়ার

জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →