Main menu

জার্নাল ও কবিতা: সুরাইয়া দীনা

ডিজিটাল ডায়েরি

প্রতিদিন ঠিক করি সকাল আটটা-নয়টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠবো। সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যে প্রতিদিন উঠে যাই। সকাল উঠতে চাওয়ার উদ্দেশ্য মূলত পড়তে বসা। যেহেতু দুপুর থেকে কাজ।সো সকাল উঠলে অন্য কিছু করার জন্যও টাইম পাওয়া যায়।আজ উঠলাম সাড়ে আটটায়। উঠেই ফোন হাতে নিলাম অন্য সব দিনের মতো।ফেসবুক,ইন্সটা স্ক্রলিং ছাড়া কাজ নাই। অথবা অ্যামাজনে জিনিশ দেখা। তো ফোন আর বিছানায় গড়াগড়ি কইরা উঠতে উঠতে সাড়ে নয়টা বাজলো। উঠে ঠিক করলাম তাড়াতাড়ি চা খেয়ে নখ কেটে পড়তে বসবো। তো পরে নখ কাটার কথা ভুলে গিয়ে চা নিয়া পড়তে বসলাম। ল্যাপটপ অন করলাম।ভাবলাম Cold/mess গানটা একবার শুনেই পড়বো। তারপর ভাবলাম ওকে গান চলুক একটু ফেসবুক চেক করে আসি। দেন গান একবারের জায়গায় কয়বার শুনলাম ঠিক নাই। পরে হঠাত গানের ভিডিওতে নাইকার চোখে কাজল দেখে মনে হইলো আমার তো কাজল নাই। তো একটা কাজল অর্ডার করি। এখন থেকে চোখে কাজল দেব গাঢ় করে। গেলাম অ্যামাজনে দেখে শুনে একটা কাজল দিলাম। Maybelline Colossal Kajal এইটা বাংলাদেশে থাকতে ইউজ করতাম। কলেজে থাকার সময়কালে কাজল একটা প্রিয় সাজার জিনিশ ছিলো। প্রায় সবসময়ই কাজল দিতাম।পরে এসে আর তেমন দেয়া হয় নি।যাই হোক অর্ডারের কাজ শেষে মনে হইলো নখ কাটার কথা,পড়ার কথা। রাগ হইলো যে বেহুদা ফোনে টাইম নষ্ট করলাম। ভাবলাম আজই ফেবু ডিএক্টিভেইট করে দিবো। সব নষ্টের মূল এটাই।আসলাম ফেবুতে আইসা মনে হইলো একটা পোস্ট করি। অনেক দিন লেখা হয় নাই কিছু। এখন লিখতেছি। সময় এগারোটা পনেরো।

 

সে যখন আসবো

সে যখন আসবো,
তুমি টের পাইবা।
তুমি টের পাইবা বাতাসে তার উপস্থিতি।
সে যখন তোমারে জড়াইয়া ধরবো,
তোমার মনে হইবো,
তোমার বুকের ভিতরে,
ডিসেম্বরের শীত নাইমা আসছে ।
টের পাইবা তোমার হৃদপিন্ড
ঠান্ডায় বরফ হইয়া গেছে।
এত শীতলতা তোমারে গ্রাস করবো
যে তোমার মনে হইবো,
দুনিয়ার আর কোনো আগুনই
তোমারে উষ্ণ করতে পারবো নাহ।
সে যখন তোমার সাথে কথা কইবো,
তোমার মনে হইবো,
সে তোমার মাথার ভিতরে বইসা আছে।
সে অনর্গল কথা বলতেছে,
তুমি অনুভব করবা
তুমি ঘুরতেছো সেই কথার সাথে সাথে,
তুমি যেন এক সীমাহীন অতলে ঘূর্ণায়মান।
তুমি তার কথা বন্ধ করতে চাইবা,
তারে মাথা থাইকা বাইর করতে চাইবা।
তুমি শীতলতা দূর করতে চাইবা,
তুমি উষ্ণ হতে চাইবা।
তুমি একটা ফুটন্ত গরম হৃদপিন্ড চাইবা,
তুমি তার আলিঙ্গন চাইবা না।
তুমি তার থাইকা দূরে যাইতে চাইবা,
তারে তুমি চাইবা নাহ।
কিন্তু তুমি কিছুই পারবা নাহ,
কারন
সে তোমারে ভালোবাসে,
অনেক ভালোবাসে,
আর সে হইলো তোমার
‘একাকিত্ব’।

 

না কুনু ফুল, না কুনু দেবদারু

পাখিরা যখন একলগে ডাইকা উঠে,
আমি তাকাইয়া দেখি,
ভাবি যেন তারা আমারে ডাকতেছে।
আসলে তারা আমারে ডাকে নাহ,
আসলে কেউই আমারে ডাকে নাহ,
না কুনু ফুল,না কুনু দেবদারু।

 

কথারা

কথা বলতে না পারার অভাবে
কত কথারা হারিয়ে যায়,
কিছু কথা মেঝেতে মুমূর্ষু যন্ত্রণায়
কাতরাতে থাকে,
একসময় তারা মারা যায়,
তাদের আর রুমের সিলিং ছোঁয়া হয় না কোনোদিন।

 

তুমি

তোমার অপেক্ষায় বইসা,
জারবেরার পাঁপড়িগুলা শুকায়া গেলো,
শহরে আর আলোর উতসবে
নানান রঙের বাতি জ্বইলা উঠলো নাহ।
তুমি আর আসবা না টের পাইয়া,
ম্যাপল সিরাপের স্বাদও আমার জিহবায় তিতা লাগা শুরু হইলো।
আমার লিপস্টিকগুলা সব রঙ বদলায়া ধূসর হইয়া গেলো।
তুমি আসছিলা,
তবে শীতের কুয়াশার মতন,
মিশিগানের তুষারের মতো যদি আসতা,
তাও সুখে দুখে দুই দিন বেশি তোমারে দেখতে পারতাম।
তুমি আর আসবা না,
তাই আমি হৃদয় মোমবাতিটা নিভায়া,
অন্ধকার কোঠরে তোমারে বন্ধি কইরা রাখছি,
তুমি একটা অকর্মন্য হইয়া আমার মস্তিষ্কে স্থবির হইয়া
বাঁইচা রইবা বাকি জীবন।

 

পুরুষ

পৃথিবীর পথে পথে হাঁটতেছে
দলে দলে সব সুদর্শন পুরুষ।
তাদের গা থেকে ভেসে আসছে
জো ম্যালনের পারফিউমের ঘ্রাণ।
তাদের অনেক আত্ম অহংকার,
অনেক প্রতিভা,
তারা লিখতে জানে কবিতা,
গাইতে জানে গান।
কেউ কেউ রাজনীতির অনীতির
করে ময়নাতদন্ত,
আর কেউ কেউ মস্তিষ্কের ভেতরে করে,
নানান জাতের জ্ঞানের চাষ।
কোনো চাঁদ আর তাদের করছে না নিঃস্ব,
তারা যেন করছে কোনো এক ইউটোপিয়ায় বাস,
যেন নেই তাদের কোনো গল্পের অভাব।
শুধুমাত্র একটা হৃদয় ব্যতিত,
তাদের যেন আজ আছে সব।

 

রাত কি আমারে ডাকে

রাত কি আমারে ডাকে?
তোমার কাছে ডাকে?
তোমার মস্তিষ্কের নিউরণের আলোড়নে তুমি কি আমারে চাও?
আমি কি ডাক উপেক্ষা কইরা
ঘুমাইয়া যামু?
ঘুমানোই কি বেটার?
অপেক্ষার ইতি টানাই কি বেটার?
তুমি কও তো দেখি,
তুমি কি ঘুমাইয়া আছো?
নাকি হাওয়ার মাঝে অন্য কাউরে খুঁজো?
রাতের আন্ধারে তুমি তারে পাও?
নাকি আমারে হারাও?

The following two tabs change content below.
সুরাইয়া দীনা

সুরাইয়া দীনা

মিশিগানের বাংলাটাউন খ্যাত ছোট শহর হ্যামট্রামিকে বাস।বেড়ে ওঠা সুনামগঞ্জে।
সুরাইয়া দীনা

Latest posts by সুরাইয়া দীনা (see all)

এডিটর, বাছবিচার।
View Posts →
কবি, গল্প-লেখক, ক্রিটিক এবং অনুবাদক। জন্ম, ঊনিশো পচাত্তরে। থাকেন ঢাকায়, বাংলাদেশে।
View Posts →
কবি। লেখক। চিন্তক। সমালোচক। নিউ মিডিয়া এক্সপ্লোরার। নৃবিজ্ঞানী। ওয়েব ডেভলপার। ছেলে।
View Posts →
মাহীন হক: কলেজপড়ুয়া, মিরপুরনিবাসী, অনুবাদক, লেখক। ভালোলাগে: মিউজিক, হিউমর, আর অক্ষর।
View Posts →
দর্শন নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা, চাকরি সংবাদপত্রের ডেস্কে। প্রকাশিত বই ‘উকিল মুন্সীর চিহ্ন ধরে’ ও ‘এই সব গল্প থাকবে না’। বাংলাদেশি সিনেমার তথ্যভাণ্ডার ‘বাংলা মুভি ডেটাবেজ- বিএমডিবি’র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক। ভালো লাগে ভ্রমণ, বই, সিনেমা ও চুপচাপ থাকতে। ব্যক্তিগত ব্লগ ‘ইচ্ছেশূন্য মানুষ’। https://wahedsujan.com/
View Posts →
কবি। লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের স্টুডেন্ট। রাজনীতি এবং বিবিধ বিষয়ে আগ্রহী।
View Posts →
গল্পকার। অনুবাদক।আপাতত অর্থনীতির ছাত্র। ঢাবিতে। টিউশনি কইরা খাই।
View Posts →
জন্ম ২০ ডিসেম্বরে, শীতকালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেছেন। রোমান্টিক ও হরর জনরার ইপাব পড়তে এবং মিম বানাইতে পছন্দ করেন। বড় মিনি, পাপোশ মিনি, ব্লুজ— এই তিন বিড়ালের মা।
View Posts →
জন্ম ১০ নভেম্বর, ১৯৯৮। চট্টগ্রামে বেড়ে ওঠা, সেখানেই পড়াশোনা। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে অধ্যয়নরত। লেখালেখি করেন বিভিন্ন মাধ্যমে। ফিলোসফি, পলিটিক্স, পপ-কালচারেই সাধারণত মনোযোগ দেখা যায়।
View Posts →
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। সংঘাত-সহিংসতা-অসাম্যময় জনসমাজে মিডিয়া, ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের বহুমুখি সক্রিয়তার মানে বুঝতে কাজ করেন। বহুমত ও বিশ্বাসের প্রতি সহনশীল গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের বাসনা থেকে বিশেষত লেখেন ও অনুবাদ করেন। বর্তমানে সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোস্যাল সায়েন্সেস, ক্যালকাটায় (সিএসএসসি) পিএইচডি গবেষণা করছেন। যোগাযোগ নামের একটি পত্রিকা যৌথভাবে সম্পাদনা করেন ফাহমিদুল হকের সাথে। অনূদিত গ্রন্থ: মানবপ্রকৃতি: ন্যায়নিষ্ঠা বনাম ক্ষমতা (২০০৬), নোম চমস্কি ও এডওয়ার্ড এস হারম্যানের সম্মতি উৎপাদন: গণমাধম্যের রাজনৈতিক অর্থনীতি (২০০৮)। ফাহমিদুল হকের সাথে যৌথসম্পাদনায় প্রকাশ করেছেন মিডিয়া সমাজ সংস্কৃতি (২০১৩) গ্রন্থটি।
View Posts →
তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, তবে কোন বিষয়েই অরুচি নাই।
View Posts →
পড়ালেখাঃ রাজনীতি বিজ্ঞানে অনার্স, মাস্টার্স। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে সংসার সামলাই।
View Posts →
মাইক্রোবায়োলজিস্ট; জন্ম ১৯৮৯ সালে, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে। লেখেন কবিতা ও গল্প। থাকছেন চট্টগ্রামে।
View Posts →
জন্ম: টাঙ্গাইল, পড়াশোনা করেন, টিউশনি করেন, থাকেন চিটাগাংয়ে।
View Posts →
বিনোদিনী দাসী (১৮৬২/৩ - ১৯৪১): থিয়েটার অভিনেত্রী, রাইটার। ১৮৭৪ থেকে ১৮৮৬ এই ১২ বছর তিনি কলকাতার বিভিন্ন থিয়েটারে অভিনয় করেন। কবিতার বই – বাসনা এবং কনক ও নলিনী। আত্মজীবনী - ‘আমার কথা’ (১৯২০)।
View Posts →