শুভ শারদ! ঈদ মোবারক!

‘সেকালের উৎসব’ নামে একটা লেখা লিখছেন গল্পকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম দৈনিক প্রথম আলোর ‘ঈদ উপহার ২০১৩’ তে, যেইটা মূল পত্রিকার ক্রেতা হিসাবে শনিবার অক্টোবর ১২, ২০১৩ তে আমি ফ্রি পাইছি।
স্মৃতিমূলক গদ্যই হয়তো লিখতে বলা হইছিল উনারে। কিন্তু পুরান উপমার স্মৃতি আইসা ভর করছে তাতে, ফ্রি হিসাবে। যদিও ঈদ উপহার, উনি পূজারে বাদ দেন নাই (থ্যাংকস, অবশ্যই) এবং ঈদ ও পূজারে একাট্টা কইরা লিখছেন, “…বাঙালির এই শক্তি তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, আকাশটা ছুঁয়ে দেখার শক্তি জোগাচ্ছে।” বাঙালির এই শক্তি আছে কি নাই, সেই প্রশ্ন বাদ দিয়াই জিজ্ঞাসা করা যায়, এই শক্তিরে কেন তিনি ইম্পসিবিলিটির দিকে ঠেইলা দিচ্ছেন? এই আকাশ ছুঁয়ে দেখা একটা ইম্পসিবিলিটি কারণ আপনি যতই উপ্রে ওঠেন, আকাশের ওইপারে খালি আকাশ ছাড়া আর কী ই বা পাইতে পারেন? [pullquote][AWD_comments][/pullquote] সুতরাং এই ছুঁয়ে দেখা কখনোই ঘটে না, যেহেতু অ্যাজ সাচ জিনিসই এগজিস্ট করে না; তাইলে তিনি কেন এই শক্তিরে এই টার্গেট দিতেছেন? শুধুমাত্র সাহিত্য করার লাইগা? কিন্তু এই সাহিত্য আসলে কী করে; খালি গদ্যের সৌন্দর্য্যবৃদ্ধিই করে না, আইডিওলজি হিসাবে তারে (এই শক্তিরে) এমনভাবে এমপ্লিফাই করে যে, সে যা না, সেই এক্সপেক্টশন তার উপর চাপাইয়া তারে ইনভ্যালিডও করে। বাক্যের ভিতরে, চিন্তারে সুন্দর করতে গিয়া এই উপমা চিন্তারে বাতিল করে আসলে; কারণ উপমাই এইখানে চিন্তারে রিপ্রেজেন্ট করে ভুলভাবে। উৎসব পুরান, ঠিক আছে; কিন্তু তারে পুরান উপমা-উৎপাদনের প্যার্টানের ভিতর দিয়াই কেন হাজির হইতে হবে?
লগে গরিব-চিন্তাও আছে! কারণ উনি গরিবের জন্য যে চিন্তা করছেন সেইটা খালি গরিবের জন্য চিন্তা না, তার মূল অ্যাজাম্পশন এইটাই যে, সমাজ মূলতঃ গরিবদের একটা জায়গা! উনি লিখছেন, “একটি বাড়িতে দেখলাম পেল্লাই ফ্রিজার কেনা হয়েছে। দুটি আস্ত গরুর জায়গা হয়ে যাবে সেখানে। গরিবেরা তাহলে কী পাবে?” মানে কোন পরিবার যদি দুইটা গরু ফ্রিজারে ঢুকাইয়া রাখে তাইলে গরিব’রা কম খাইতে পাইবো; কারণ সমাজে গরু’র সংখ্যা ফিক্সড হয়া আছে! এমন ঘটনা কি কখনোই ঘটতে পারে না যে, যেই পরিবারের টাকা আছে তারা একটার জায়গায় দুইটা গরু ফ্রিজারে রাখবো এবং যেই পরিবার এক কেজি মাংস খাইতো তারাও দুই কেজি মাংস খাইবো? পারে না কারণ, ধারণা করি উনি এখনো গরিব-সমাজতন্ত্রের চিন্তার ভেতরেই আছেন যেইখানে সবার অর্থনৈতিকভাবে বড়লোক হওয়া সম্ভব না, সবাই যেহেতু জড়িত, তাই গরিব-ই হওয়া লাগবো! চিন্তা হিসাবে এইটারে গরিব-চিন্তা বলার প্রস্তাব আমি রাখলাম।
এই পুরান ও গরিব চিন্তার হাত থিকা মা দুর্গা আমাদের রক্ষা করুন। আল্লা যেন আমাদের (সৈয়দ মনজুরুল ইসলামও ইনক্লুডেড) বাঁচাইয়া রাখেন।
শুভ শারদ! ঈদ মোবারক!
‘সেকালের উৎসব’ লেখাটার লিংক: http://bit.ly/17nPeVo


Latest posts by ইমরুল হাসান (see all)
- মন্টগোমেরি বাস বয়কট: মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ভাষণ - মার্চ 2, 2021
- না-বলা জিনিসের বয়ান: আল-মাহমুদের অটোবায়োগ্রাফি নিয়া আলাপ - ফেব্রুয়ারী 15, 2021
- ফিকশন: মেমোন্তো মরি (Memento mori) – ৫ - ফেব্রুয়ারী 11, 2021